June 19, 2025, 2:03 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
ইরানে এ পর্যন্ত নিহত ৬৩৯, ১ হাজার ৩২০ জনের বেশি আহত ইরানের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ চান ট্রাম্প, মর্যাদাবান হায়দারের নামে যুদ্ধ শুরু : আয়াতুল্লাহ খামেনি কুষ্টিয়াসহ ১৭ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস লন্ডন ঘোষনায় অনৈক্য ঃ ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে যায়নি জামায়াত কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশন/ গণসাক্ষর ও অবস্থান কর্মসূচি, প্ল্যাটফর্ম উন্নয়ন, টিকিট ব্যবস্থার সহজীকরণ ও নিরাপত্তা দাবি অতিসত্বর তেহরান খালি করার আহবান ট্রাম্পের, যুদ্ধ বন্ধে পুতিন-এরদোয়ানের ফোনালাপ যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অস্বীকৃতি ইরানের, কখনো কখনো যুদ্ধ করেই সমস্যার সমাধান করতে হয় : ট্রাম্প ভারতের মাধ্যমে নেপাল থেকে আমদানি বিদ্যুৎ গ্রিডে, এ বছরেই চালু হতে পারে রূপপুরের প্রথম ইউনিট বাংলাদেশ-ভারত পণ্য বাণিজ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলের তিনটি প্রধান স্থলবন্দরে আষাঢ়ের প্রথম দিন/টানা বৃষ্টির আভাস জানালো আবহাওয়া অফিস

আপিল নিষ্পত্তির আগেই ফাঁসি, রাষ্ট্রপক্ষ বলছেন সব নিয়ম মেনেই হয়েছে

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
আপিল নিস্পত্তির আগেরই নি¤œ আদালতে দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে বরে অভিযোগ উঠেছে। ফাঁসি কার্যকরের ৪ বছর পর এই অভিযোগ উত্থাপিত হলো।
ফাঁসি কার্যকর হওয়া আসামীরা হলেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মৃত মুরাদ আলীর ছেলে আব্দুল মোকিম (৬০) ও মৃত আকছেদ আলীর ছেলে গোলাম রসুল ঝড়ু (৬২)। এরা দুজনেই নিষিদ্ধ চরমপš’ী সংগঠন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির দুই আঞ্চলিক নেতা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার হোসেন ওরফে মনোয়ার মেম্বার হত্যাকান্ডের আসামী।
২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) যশোর কেন্দ্রীয় কারাগাারে তাদের ফাঁসির কার্যকর করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন নিজগ্রাম চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামে চরমপš’ী ক্যাডারদের হাতে খুন হন মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মনোয়ার হোসেন। তিনি ¯’ানীয় কুমারী ইউনিয়ন পরিষদের দু’মেয়াদে সদস্য ও কৃতি খেলোয়াড় ছিলেন। তার খুনের ঘটনায় তার ভাই মুক্তিযোদ্ধা অহিম উদ্দীন বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ২১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই হত্যা মামলার এক যুগ পর ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল মামলার বিচারে তিন জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ, দুই জনকে যাবজ্জীবন ও অপর আসামিদের খালাস দেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-২। রায়ে ঝড়ু ও মোকিমসহ তিনজনকে ফাঁসি ও দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। পরে হাইকোর্ট ঝড়ু ও মোকিমের ফাঁসি বহাল রেখে বাকি সবাইকে খালাস দেন।
মৃত্যুদন্পদেশপ্রাপ্তরা হলেন- একই ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, মোকিম ও ঝড়ু।
এরপর বিচারিক আদালতের রায়ের পর নিয়ম অনুসারে আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য মামলাটি হাইকোর্টে আসে। মামলার ডেথ রেফারেন্স নাম্বার ছিল ৩৯/২০০৮। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মোকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে ২০১৩ সালের ৭ জুলাই ও ৮ জুলাই মামলার রায় ঘোষণা করেন। বাকি আসামিদের খালাস দেন হাইকোর্ট।
কোনো আসামির দন্ড কার্যকর করার আগে নিয়ম অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আসামির পক্ষ থেকে আপিল করার কথা। কিন্তু দুই আসামির করা আপিল আবেদন শুনানির আগেই তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চে শুনানির জন্য আজ কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) ছিল। কিন্তু মামলার শুনানি হওয়ার আগেই জানা যায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে গেছে।
আপিল আবেদনকারী আইনজীবী মো. আসিফ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আপিল আবেদনের পক্ষে শুনানির জন্যে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এর কয়েক সপ্তাহ আগে মামলাটি শুনানি করে দেওয়ার জন্যে সুপ্রিম কোর্টের অপর আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির আমাকে বলেন। তারই পরামর্শে আমি মামলাটি শুনানির জন্য ওকালতনামা নেই। এরপর এসে তিনি আমাকে ফোন করে জানান, মামলার দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে গেছে। এর আগে আমি জানতাম না যে আসামিদের দণ্ড কার্যকর হয়ে গেছে।
জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকর করতে অনুমতি প্রয়োজন হয় হাইকোর্টের। হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন হওয়ার পর তা কার্যকর করতে আরও কিছু প্রক্রিয়া মেনে চলতে হয়। তবে, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মামলার কোনো পক্ষ যদি আপিল দায়ের করে সে ক্ষেত্রে তা নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষা করতে হয় কারা কর্তৃপক্ষকে।
অথচ চিরাচরিত সেই নিয়মের বাইরে গিয়ে আপিল নিষ্পত্তির আগেই চুয়াডাঙ্গার মোকিম ও ঝড়ু নামে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। যদিও বিষয়টি শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) শুনানির জন্য ছিল।
পরে মোকিম (আপিল নং- ১১১/২০১৩) ও ঝড়ু (আপিল নং- ১০৭//২০১৩) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করেন। তখন মোকিমের পক্ষে আপিল মামলাটি তদারকির দায়িত্ব পান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির। এরপরও দীর্ঘ আট বছর চলে গেছে। সম্প্রতি আপিলটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে।
মামলাটি শুনানির জন্য তালিকায় ওঠার পর দরিদ্র মোকিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, আপিল নিষ্পত্তির আগেই ২০১৭ সালে মোকিমের ফাঁসি কার্যকর করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। এমনকি অপর আসামি ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিয়ম অনুসারে, হাইকোর্ট কর্তৃক কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের পর আপিল দায়ের করা হলে আপিল বিভাগ থেকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে এবং সংশ্লিষ্ট ডিসির কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা যায়। ফলে দণ্ড কার্যকর ওই সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
তদারকি করতে গিয়ে আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির নিজেও ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিচারপ্রার্থী মোকিম কনডেম প্রিজনার ছিলেন। বিচারপ্রার্থীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়েছি, কনডেম প্রিজনার মোকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ড এরইমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। মূলত মোকিম ও ঝড়ুর পরিবার খুবই দরিদ্র। তাই তাদের পক্ষে পরিবারের সদস্যরা সেভাবে মামলার বিস্তারিত খোঁজ নিতে পারেননি। সে সামর্থ্যও তাদের ছিল না বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
কথা বলেন মোকিমের ভগ্নিপতি ছফেল উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান তারা এটুকু জানতেন যে মামলার আপিল হয়েছে। তারপর হঠাৎই যশোর কারাগার থেকে ফোন আসে ফাঁসি কার্যকরের।
“উকিল সাহেব জানাইছিলেন আপিল হইছে, ফাঁসি ফিলফাজিল (মিমাংসা) হতে দেরি হবে। কিš‘ কি দিয়ে কি হলো বুঝতি পারিনি,” জানান ছফেল উদ্দিন। তিনি পেশায় ব্যবাসায়ী।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net